সুরা বাকারার প্রথম ও শেষাংশের ফজিলত

(১) আলীফ-লাম-মীম্‌ --। যা-লীকাল্ কিতা-বু লা-

রাইবা ফীহি, হুদাল্লিল্ মুত্তাকীন। আল্লাজীনা ইয়্যুঃমিনুনা

বিল্ গাইবি ওয়া-ইয়ুক্কি মুনাচ্ছলাতা ওয়া মিম্‌মা রাযাক্

না হুম্ ইউন ফি ক্কোন্ । ওয়াল্লাজীনা ইয়্যূঃমিনুনা বিমা

উনঝিলা ইলাইকা ওয়ামা উনঝিলা মিং কাব্লিকা ওয়াবিল্ আখিরাতে হুম ইউকিনুন্। উলা—য়িকা আলা

হুদাম্মির রব্বিহিম্ ওয়া উলায়িকা হুমুল্ মুফ্লিহুন্” ।

অর্থঃ (১) আলিফ, লাম্, মীম। এ সেই কিতাব যাতে

কোনই সন্দেহ নাই। পথ প্রদর্শনকারি পরহেজগারদের

জন্য। যারা অদেখা বিষয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে

এবং নামায প্রতিষ্ঠা করে। আর আমি তাদের যে রুজি

দান করেছি তা থেকে ব্যয় করে এবং যারা বিশ্বাস স্থাপন

করেছে সে সব বিষয়ের উপর যা কিছু তোমার প্রতি

অবতীর্ন হয়েছে এবং সে সব বিষয়ের উপর যা তোমার

পূর্ববর্তীদেরও প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে। আর আখেরাতকে

যারা নিশ্চিত বলে বিশ্বাস করে। তারাই নিজেদের

পালনকর্তার পক্ষ থেকে সুপথ প্রাপ্ত, আর তারাই যথার্থ

সফলকাম।

(২) “আ-মানার্ রসূলু বিমা-উংঝিলা ইলাইহিমির্ রব্বিহি ওয়াল্ মুমিনুনা কুল্লুন আ-মানা বিল্লাহি ওয়া

মালা——ইকাতিহী, ওয়া কুতুবিহি ওয়া রূসুলুহী লা-

নুফার্রিকু বাইনা আহাদিম্মির রসুলিহি ওয়া ক্বলু ছমিনা,

ওয়া আত্বআনা গুফ্ররানাকা রব্বানা ওয়া ইলাইকাল্

মাছির্। লা ইউকাল্লি ফুল্লা-হু নাফ্‌ছান্, ইল্লা- উছ্ আহা

লাহামা-কাছাবাত্ ওয়া আলাইহা মাক্তাছাবাত্‌, রব্বানা-লা-তুয়াখিজ্না ইন্নাছীনা, আও আখ্তানা, রব্বানা-ওয়ালা তাহ্-মিল আলাইনা ইছ্-রান কামা-হঃআমালতাহু আলাল্লাজীনা মিং কাব্‌লিনা রব্বানা-ওয়া-লা-তুহাম্মিল্না-

মালা ত্বোয়াকাতাল্‌না বিহও আফু আন্না- ওয়াগ্ ফির্লানা ওয়ার্ হাম্‌না আংতা মওলানা-ফাংছুরনা আলাল্ কাউমিল্ কাফিরীন্”

অর্থঃ (২) তাঁহার পালনকর্তা হইতে যাহা অবতীর্ণ

হইয়াছে রসুল তাহা বিশ্বাস করেন এবং মুসলমানগণ

সকলেই আল্ল-হর প্রতি, তাঁহার ফেরেশ্তাগণের প্রতি,

তাঁহার কিতাবসমূহের প্রতি পয়গম্বরগণের প্রতি বিশ্বাস

করে এবং আমরা তাঁহার রসুলগণের মধ্যে কোন প্রভেদ

করিনা, তাহারা বলেন যে আমরা স্মরণ করিলাম ও

স্বীকার করিলাম; হে আমাদের পালনকর্তা। আমরা

তোমারই নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করিতেছি এবং আমরা

তোমারই দিকে ফিরিয়া যাইব।

আল্ল-হ্ কাহাকেও তাহার সাধ্যাতীত কষ্ট দেন না এবং

যে যাহা উপার্জন করিয়াছে তাহা তাহারই জন্য সীমাবদ্ধ

এবং যে যাহা অর্জন করিয়াছে তাহা তাহারই জন্য, যে

আমাদের পালনকর্তা। যদি আমাদের ভুল ভ্রান্তি হয়,

সেজন্য আমাদিগকে ধরিও না। আমাদের পূর্বে যাহারা

চলিয়া গিয়াছে, তাহাদের প্রতি যেরূপ কঠিন বোঝা

চাপাইয়া দিয়াছিলে আমাদের উপর সেরূপ কঠিন বোঝা

দিওনা। হে আমাদের পালনকর্তা। যাহা আমাদের

ক্ষমতার বাহিরে তাহা আমাদের উপর চাপাইয়া দিওনা,

আর-আমাদিগকে ক্ষমা কর এবং আমাদের উপর অনুগ্রহ
কর, তুমি আমাদের একমাত্র প্রভু। অতএব কাফিরদের
উপর আমাদিগকে জয়ী করিয়া দাও।
ফজিলতের বর্ণনাঃ এই আয়াতদ্বয়ের প্রথম আয়াতে
আল্ল-হ্ তা'আলা তাঁহার প্রিয় রসুল এবং ঈমানদারগণের
নিদর্শন বর্ণনা করিয়াছেন, ইহার মর্ম এই যে, যাহারা
আল্ল-হর কুরআন অন্যান্য কিতাবসমূহ, ফেরেশ্তা ও
রসুলগণকে সত্য বলিয়া বিশ্বাস করে তাহারাই প্রকৃত
ইমানদার। তাহাদের নিকট সকল নবীই সমান সম্মান ও
ভক্তির পাত্র, যদিও কোন নবী ও রসুলকে আলু-হ্
তা'আলা বিশেষরূপে গৌরবান্বিত করিয়াছেন। শেষ
আয়াতে ইহকাল ও পরকালের মুক্তির জন্য সাহায্যের
প্রার্থনা আছে। এই আয়াত দুইটি ঈমানের ভিত্তি, এই
সকল বিষয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপন না করিলে ঈমানদার
হওয়া যায় না। এই আয়াত দুইটি পাঠে আল্লাহ, নবী,
রসুল, ফেরেশ্তা ও আসমানি কিতাবসমূহের সত্যতার
সাক্ষ্য দেওয়া হয়, ফলে তাহাদের দু'আ লাভ হয়, এবং
আল্ল-হ্ তা'আলার রহমত অবতীর্ণ হয় ও ইহকাল
পরকালের মঙ্গল হয়।
ফযীলতঃ ১। বিপদের সময় আয়াতুল্ কুর্সী ও এই
আয়াত দুইটি পাঠ করিলে আল্ল-হ্ ফজলে বিপদ হইতে
মুক্তি পাওয়া যায়।
২। প্রত্যেক রাত্রে এই আয়াত দুইটি পাঠ করিয়া ঘুমাইলে 
চোর ও ডাকাতের ভয় হইতে নির্ভয়ে থাকা যায় ।
৩। নিয়মিতভাবে প্রত্যহ আয়াতুল্ কুর্সী ও এই দুই
আয়াত পাঠ করিলে কখনও অভাব অনটন হয় না। ঋণ
পরিশোধ হয়, শত্রু ধ্বংস হয় এবং মনের ইচ্ছা পূর্ণ হয়।
উপরোক্ত আয়াতসমূহ প্রত্যেহ পাঠ করিলে যাবতীয় মঙ্গল
লাভ হয়। সুরা বাক্কারার শেষ দুইটি আয়াত আরশের
নীচের ধন ভান্ডার হইতে দেওয়া হইয়াছে। ইহা পাঠ
করিয়া দু'আ করিলে আল্ল-হর কাছে যাহা চাওয়া যায়
তাহাই পাওয়া যাইবে বলিয়া উল্লেখ আছে। এই আমলে
কখনও অভাব অনটন হয়না। বিপদ আপদ দূর হয় ও
মনো বাঞ্ছা পূর্ণ হয়। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে এই আমল গুলো করার তাওফিক দান করুন আমিন। 

Post a Comment

Previous Post Next Post